ADS

728 x 90

Post your add here

Read in English

August 12, 2024 4:37 pm

featured-image

রাজনৈতিক ও সুশাসন সংক্রান্ত আমাদের সকল সমস্যার মূলে রয়েছে তাড়াহুড়ার মধ্য দিয়ে আমাদের সংবিধানের রচনা এবং প্রণয়ন করার মাধ্যমে। বাংলাদেশের প্রথম সংসদে, ১৯৭২ সালের নভেম্বরে আমাদের এই সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। তাহলে আমরা বলতেই পারি যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষাবিদ ড. কামাল হোসেন প্রায় ৭-৯ মাস সময় নিয়েছিলেন খসড়া প্রস্তুত করতে, যা এত অল্প সময়ের মধ্যে কারও পক্ষে করা প্রায় অসম্ভব। আর এই কথাটি যে ঠিক তাঁর একটা বড় প্রমাণ হলো, যে সংসদে এই সংবিধান ১৯৭২ সালে তিনি আইন মন্ত্রী থাকাকালে  পাশ করিয়েছেন, সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের কমিটির নেতৃত্ব দেবার মাধ্যমে, সেই একই সংসদে তা তিন বছরের মধ্যেই সেই একই জাতীয় পরিষদ দ্বারা সম্পূর্ণ সংশোধিত হয়েছিল।

আশ্চর্যজনকভাবে, ড. কামাল সংশোধনের সেই সময়েও সেই সংসদের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন যেটি তাঁরই হাত ধরে একই সংসদে তাঁর মাত্র তিন  বছর আগে গৃহীত হয়েছিল।

সদ্যজাত একটা জাতির শাসন গঠনতন্ত্রের জন্য  আলোচনা থেকে সরাসরি সংবিধান লিখন পর্যন্ত প্রথমেই যে সময়টা এই যে সংবিধানের প্রণয়নের প্রক্রিয়ার প্রাপ্য তা দেয়া হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন থেকেই যায় সেজন্য। তারপর থেকে আমাদের সংবিধান আইন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সংশোধন করা হয়েছে, যা জনগণ বা শাসক কাউকেই সন্তুষ্ট করতে পারেনি। প্রতি ৫-৯ বছর ব্যবধানে সংবিধানে বিভিন্ন কাটাছেড়া এবং রদবদল অনেক রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি করেছে কিন্তু পক্ষান্তরে নির্বাহী শাখা কমবেশি একই রয়ে গেছে। সর্বশেষ শেখ হাসিনার আমলে এমন সব পরিবর্তন এসেছে যেগুলো আইনত বৈধ কিন্তু সেগুলো দেশের সাধারণ জনগণ মনে করে বাংলাদেশ ভারতের প্রজা রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যার কারনে, সাধারণ জনসাধারণ মনে করেন যে সংবিধান এমনকি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করে না। দিন শেষে, আমরা একটি অস্থিতিশীল দেশ, সম্পূর্ণ অসুখী জাতি।

এর প্রতিকার কি?  
 

Comments & Ratings

No Comment Yet
Overall Score: 10.0 / 10 |

আমাদের চলমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান

আমাদের রাজনৈতিক সংকটের প্রতিকার নিহিত রয়েছে আমাদের সংবিধানের সম্পূর্ণ নতুন করে রচনা করার মধ্যে।

আমি আশ্বস্ত হবো যদি আমাদের দেশের সকল পেশার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে "গঠনতন্ত্র সংস্কারের" জন্য একটি জাতীয় কাউন্সিল গঠিত হয় এবং একটি অধিবেশনের মতো করে বসে। ১৮ জনের এই ছোট মন্ত্রিসভা যথেষ্ট নয়।

জাতীয় সংসদ ভবন এখন ফাঁকা। আমরা আমাদের সংবিধানের যথাযথ সংশোধনী গ্রহণের জন্য বিতর্ক এবং আলোচনা করার জন্য এটি ব্যবহার করতে পারি। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমাদের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় তাড়াহুরার কারনে কিছু অসম্পূর্ণতা বা ভুল রয়ে গিয়েছিল। তা না হলে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা (তখন যাকে জাতির পিতা বলা হতো) কেন এটি বাতিল করে ৩ বছরের মধ্যে আরেকটি গঠনতন্ত্র তৈরি করবেন?

সংবিধানের কাঠামোতে সব ধরনের পরিবর্তন করার কাজটা দেশের আইন বিভাগের। আইন বিভাগের সর্বোচ্চ সংস্থা হলো জাতীয় সংসদ। দুর্ভাগ্যবশত,  সংসদ সদস্যদের এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষমতা খুবই কম। আমরা তাদের সংসদে এসে স্থানীয় সমস্যা এবং গুরুত্তহীন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দেখি, কারণ সেই স্থানীয় আলোচনার জন্য কোনো নিম্নকক্ষ নেই।  অর্থাৎ যে জাতীয় সংসদের মূল কাজটিই উপেক্ষিত। কাজেই জাতীয় সংসদের ভিতর এসব অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা জাতীয় সংসদের সদস্যদের প্রায় বেকার করে তুলেছে। মানে তাদের সংবিধান আর আইন পরিবর্তন প্রসঙ্গে কোন কাজ নেই। একরকম কোনো পরিবর্তন আনার ক্ষমতাও নেই। ফলে, তারা রাজনৈতিক স্তুতি গান গায়, নাচে, কান্না করে, কবিতা আবৃত্তি করে, কারো বীর গাঁথা কিংবা দুঃখের কাহিনী শোনায়,  নানান গল্প বলে, হাসাহাসি, রসিকতা, ইত্যাদিতে সময় কাটায়।

তাহলে সংবিধান যে সংশোধন হচ্ছে, তা কিভাবে সূচিত হচ্ছে? আমাদের দেশের প্রচলিত বিধান অনুযায়ী, সংবিধানে পরিবর্তনের সূচনা আইন কমিশন থেকে হয়, যারা প্রকৃতপক্ষে আমাদের আইনগত সংশোধনীর ভাগ্য নির্ধারণ করে। তাই, আমাদের জাতির জন্ম থেকেই আমরা দেখেছি যে সংবিধান সব আইনজীবীদের হাতে, রাষ্ট্র-বিজ্ঞানীদের এখতিয়ারে নেই। আমরা কখনোই প্রকৌশলী, চিকিৎসক, ব্যাংকার, রাষ্ট্র-বিজ্ঞানী, সাংবাদিক, শিক্ষককে বাংলাদেশের সংবিধানে ভুমিকা রাখতে দেখিনি। আইনজীবীরা কেবল আইনের ব্যবহারকারী হওয়ার কথা, তাদের এককভাবে আইন প্রণয়নকারী হওয়ার সমীচীন নয়।

এই ক্ষেত্রে আমরা জাপানি মডেল অনুসরণ করতে পারি।

জাপানে আমাদের মতো নিয়মিত আইন বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ রয়েছে। কিন্তু তাদের অনেক স্বাধীন জাতীয় পরিষদও রয়েছে, যা এই দুই বিভাগকে সহায়তা করার জন্য দেশের প্রাজ্ঞ প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। এর ফলে কোন বিভাগই স্বৈরাচারী হতে পারে না। মনে রাখবেন, জাপানেও দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা রয়েছে, যেমনটা পৃথিবীর সকল দেশেই। শিনজো আবেকে এরকম কিছু বিতর্কিত কারণের জন্য হত্যা হয়েছিলেন। জাপানিরা সেই ঘটনাকে চেপে রেখেছে।

জাপানের জাতীয় বিজ্ঞান কাউন্সিল (SCJ) বাংলাদেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। এতে ২১০ জন নির্বাচিত কাউন্সিল সদস্য এবং প্রায় ২,০০০ সহযোগী সদস্য রয়েছে, যারা প্রায় ৮৭০,০০০ বিজ্ঞানীদের প্রতিনিধিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। SCJ একটি সার্বজনীন দৃষ্টিকোণ থেকে এবং একটি ব্যাপক ও বহুস্তরীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে, যেখানে দার্শনিক, সামাজ-বিজ্ঞান, প্রাণ-বিজ্ঞান, প্রকৃতি-বিজ্ঞান, চিকিৎসআ-বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিদ্যা থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল জটিল বিষয়ের বিজ্ঞানীরা অন্তর্ভুক্ত। এর কাজ কি? রাষ্ট্রের সকল জনগুরুত্বপূর্ণ  সিদ্ধান্ত প্রণয়নের জন্য নির্বাহী বিভাগ কি সিদ্ধান্ত নিবে তাঁর দিকনির্দেশনা পাবার জন্য তাঁরা এই কাউন্সিলের শরণাপন্ন হয়। যেমন জাপানে কোভিড বিধিনিষেধগুলি প্রথমে কাউন্সিলে আলোচনা করা হয় এবং তারপর সরকারের কাছে বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়, যা আমাদের দেশে অনুপস্থত থাকার কারনে একটা ছোট গোষ্ঠী কিংবা এক ব্যক্তির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। একই রকমভাবে তাদের আইন বিভাগ নানান জটিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত/ পরামর্শ চেয়ে এই “জাতীয় বিজ্ঞান পরিষদ” এর শরণাপন্ন হয়।

তাদের ওয়েবসাইটটি দেখার জন্য আপনি এই লিংকে যেতে পারেন: https://www.scj.go.jp/en/scj/members.html

যদি আপনি পরিবর্তন চান তবে এটি আমাদের অভ্যন্তর থেকে তৃণমূল স্তর থেকে শুরু করা উচিত, বাহ্যিক কসমেটিক পরিবর্তন নয়। আমার কাজ হলো এই সমস্ত রেফারেন্স তরুণদের সামনে তুলে ধরা, যাতে তারা পরিবর্তন আনতে পারে।

Comments & Ratings


View Comments
Undoubtedly, the thinking of constitutional reformation is appreciable. The relevant writing is prudent and practical. It can help to rebuild our loving country. Therefore, I wish the state authorities will give attention properly and will attend accordingly.....
Read more
Overall Score: 10.0 / 10 |
Read in English

Author

author-image

A Y M SAIF ULLAH

This author is an alumni of Jahangirnagar University, Savar Dhaka, English Department.

Currently An entrepreneur and the CEO of a Japanese foreign direct investment company in Bangladesh in the fields of ICT, ERP, Industrial Automation and Robotics.

He holds work experience in the fields of education, banking, corporate governance, real estate, central air conditioning, ICT and Industrial Automation.

A member of Gulshan Society and apolitical think-tank, Islamic in faith, ethnicity is Bengali. Language skills include Bangla, English and French